স্বদেশ ডেস্ক:
মানি লন্ডারিং আইনে করা তিন মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা, আলোচিত দুই ভাই ও গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের সংশ্লিষ্ট জিআর শাখায় এ চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সারোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বুধবার বিকেলে গেন্ডারিয়া, ওয়ারী ও সূত্রাপার থানার মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এনু-রুপনের নামে ব্যাংকে ১৯ কোটি টাকা এবং পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ১২৮টি ফ্ল্যাটের খোঁজ মিলেছে। ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এ দুই ভাই। এনু-রুপনের আয়ের বড় উৎস ছিল মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা। জুয়ার ব্যবসার মধ্য দিয়ে অল্প সময়ে টাকার কুমিরে পরিণত হন এনু-রূপন।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে ৭ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর ও গেণ্ডারিয়া থানায় তাদের নামে ৬টি মামলা হয়।
পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই বাড়ি থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। আর পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা হয়।
অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনও এনু-রুপনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে। মামলায় এনুর বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের এবং রুপনের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
সিআইডির তদন্তে ১২৮টি ফ্ল্যাট, ছয়টি গাড়ি ও কয়েক বিঘা জমির খোঁজ মিলেছে। সিআইডি তদন্ত করে দেখেছে, বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্ণ রাখার পাশাপাশি ব্যাংকেও বিপুল পরিমাণ টাকা জমা রাখেন এনু ও রুপন ভূঁইয়া।
সিআইডির তদন্ত অনুযায়ী, তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকা। আদালতের আদেশে এসব টাকা এখন জব্দ রয়েছে।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হন এনু-রূপন।